Health Talk丨স্বাস্থ্য কথা http://bdhealthtalk.blogspot.com/2016/02/blog-post_47.html

ট্যারা চোখের বৃত্তান্ত


ট্যারা তো নয়, লক্ষ্মীট্যারা
—ট্যারা চোখ নিয়ে কেউ
কেউ এমন মন্তব্য করেন। আসলে
কোনো ট্যারাই লক্ষ্মী নয়।
কেননা ট্যারা চোখের
সঠিক সময়ে চিকিৎসা না
করা হলে পরবর্তী সময়ে
আক্রান্ত চোখটি ধীরে
ধীরে দৃষ্টিশক্তি হারাতে
পারে। তাই ট্যারা চোখ
নিয়ে অযথা কালক্ষেপণ করা
ঠিক নয়।
কাকে বলে ট্যারা চোখ
ট্যারা চোখকে
চিকিৎসাবিজ্ঞানে বলে
স্কুইন্ট বা স্ট্রাবিসমাস। এতে
একটি চোখ সামনে কোনো
কিছুর দিকে ফোকাস করার
সময় অন্য চোখটি সেদিকে
না তাকিয়ে বরং ওপর-
নিচে বা ডানে-বাঁয়ে
যেকোনো দিকে ফোকাস
করে। সাধারণত ট্যারা চোখ
শিশুবয়সেই দেখা যায়।
পরিসংখ্যান বলে, প্রতি ৫০০
শিশুর মধ্যে একজন ট্যারা।
স্কুলে যাওয়ার আগেই, বলতে
গেলে তিন বছর বয়সের আগে
মা-বাবার কাছে ধরা পড়ে
যে তার শিশুর চোখ দুটো একই
সময়ে একই দিকে তাকায় না।
শিশুটি তখন ভালো দেখার
সুবিধার্থে আক্রান্ত চোখ
দিয়ে দেখা বন্ধ করে দেয়।
চিকিৎসা না হলে ওই
চোখটি ধীরে ধীরে দৃষ্টি
হারাতে পারে।
কেন হয় ট্যারা
ট্যারা চোখ আসলে চোখের
সমস্যা নয়, বরং চোখের
অন্তর্গত পেশির সমস্যা।
আমাদের চোখ এদিক-ওদিক
নাড়াচাড়ার জন্য আমরা
কিছু সূক্ষ্ম পেশি ব্যবহার করি।
কোনো এক দিকে
তাকানোর সময় এই
পেশিগুলোর একযোগে
সম্মিলিতভাবে কাজ করার
কথা। কোনো কারণে এদের
মধ্যে ভারসাম্য নষ্ট হয়ে
গেলে দুই চোখ দুই দিকে
তাকাতে শুরু করে। কোনো
কোনো শিশু জন্মগতভাবে
ট্যারা—একে বলে
কনজেনিটাল স্কুইন্ট। ছয় মাস
বয়সের মধ্যেই তা দৃশ্যমান হয়।
অনেকের ট্যারা চোখ আবার
বংশগত। আবার দৃষ্টিশক্তির
সমস্যায়, যেমন হ্রস্বদৃষ্টি বা
দীর্ঘদৃষ্টিতে আক্রান্ত
শিশুরা কোনো কিছুতে
ফোকাস করতে গিয়ে ধীরে
ধীরে ট্যারা হতে থাকে।
জন্মগতভাবে সমস্যাযুক্ত শিশু,
যেমন: ডাউনস সিনড্রোম,
সিরিব্রাল পালসি বা
মস্তিষ্কের টিউমার, চোখের
টিউমার ইত্যাদি রোগেরও
একটা উপসর্গ হতে পারে
ট্যারা চোখ।
চিকিৎসা কী, কেন?
সাত বছর পর্যন্ত একটি শিশুর
ভিশন বা দেখার প্রক্রিয়া
গড়ে উঠতে থাকে। এই সময়ের
মধ্যে ট্যারা চোখের
চিকিৎসা না করা হলে এই
গঠনপ্রক্রিয়া ব্যাহত হয়। শিশু
আক্রান্ত চোখ দিয়ে দেখা
বন্ধ করে দেয় অভ্যাসবশত, ওই
চোখটি ‘দেখা’ শিখে
উঠতে পারে না এবং ধীরে
ধীরে দৃষ্টি হারাতে
থাকে। এই সমস্যাকে বলে
অ্যামব্লিওপিয়া। এ ছাড়া
ট্যারা চোখের কারণে
শিশুরা ঝাপসা দেখে,
কখনো দুটো দেখে। আশ্চর্য
হলেও সত্যি,
অ্যামব্লিওপিয়া রোধ করতে
ভালো চোখটিকে ঢেকে
রাখতে হয় এবং ট্যারা
চোখটিকে দিয়ে ‘দেখা’
দেখাতে হয়। এটা করা হয় আই
প্যাচিং-এর মাধ্যমে। এ
ছাড়া দরকার হতে পারে
ভিশন থেরাপি, চোখের
ব্যায়াম বা বিশেষ চশমা।
কারও কারও জন্য চোখের
পেশির শল্যচিকিৎসাও
লাগতে পারে। যত অল্প বয়সে
চিকিৎসা শুরু করা যায় তত
বেশি দৃষ্টিশক্তি রক্ষা করা
যায়। তাই শিশুর চোখ ট্যারা
মনে হলে বিলম্ব না করে
চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়াই
উচিত।

সূত্র: এনএইচএস, প্যাশেন্ট কো
ইউকে|

অন্যদের সাথে শেয়ার করুন

Unknown
পোস্ট করেছেনঃ Unknown
পোস্ট ক্যাটাগরিঃ
0 Comments

দয়া করে নীতিমালা মেনে মন্তব্য করুন ??

টেক জান প্রো কী?